ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরী পরিচালনা ও বিকাশ, যোগাযোগ, পানি স্বাস্থ, শিক্ষা প্রশিক্ষণ, কৃষি, চিকিৎসা, আইটি, প্রযুক্তি সেক্টরসহ সকল দিক ও বিভাগে যত উন্নয়নের ছোঁয়া তার মধ্যে আছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারগণের সক্রিয় অত্যাবশ্যকীয় অংশগ্রহণ।
সরকারী, আধাসরকারী, স্বায়ত্বশাসিত, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে শত শত কোটি টাকা ব্যায় হয়ে থাকে এই প্রকৌশলীদের মাধ্যমে। দেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নিতে হলে প্রকৌশলীদের দেশপ্রেম এবং নৈতিকতার আদর্শে উজ্জিবিত হয়ে ভূমিকা পালন করতে হবে। তাই তাদেরকে হতে হয় দক্ষ ও অভিজ্ঞ এবং একই সাথে নৈতিকতার মানদন্ডে উচ্চমানে। আগামী দিনে স্মার্ট ও উন্নত সমৃদ্ধি বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য মধ্যস্তরের (Mid-Level) কারিগরি শিক্ষা তথা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যাবস্থাকে এবং কারিগারি পেশায় নিয়োজিত প্রকৌশলীদের যথাযথ মুল্যায়ন করা অপরিহার্য। অথচ এক্ষেত্রে আমরা লক্ষ করছি নানা ষড়যন্ত্র, অবমূল্যায়ন এবং প্রতিবন্ধকতা। আছে নানা সীমাবন্ধতা, ভূল পরিকল্পনা, দূর্নীতি অপচয় এবং দেশপ্রেমের ঘাটতি।
এমতাবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণকে উন্নত নৈতিক চরিত্রে উন্নীতকরন, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পারস্পরিক সহযোগীতা ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২৫ ডিসেম্বও ঢাকার অদূরে টঙ্গীতে ১০০ জন সিনিয়র প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এফডিইবি) আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।
আল্লাহ রব্বুল আলামিনের অজুত শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ। দরুদ ও ছালাম আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসুল (সা:) এর প্রতি। মাগফিরাত ও জান্নাত কামনা করছি সেই মহান মনিষীগণের যারা তাদের সময়, শ্রম, রক্ত ও ঘাম দিয়ে সত্য ও ন্যয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন।
মহান স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস, লিডারশীপ ট্রেনিং, অনলাইন ট্রেনিং প্রোগ্রাম, বিভিন্ন পেশাগত দিবস সমূহ সম্পন্ন করতে উপস্থিত হয়ে ও যোগদান করে উৎসাহিত করেছেন তাদের মধ্যে আছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকগণ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ।
বিশেষ করে প্রত্যক্ষভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন জেলা ও মহানগর উপদেষ্টাগন ও দায়িত্বশীলবৃন্দ। এই স্মরনীকায় প্রবন্ধ ও আর্টিক্যাল প্রদান করে প্রকৌশলী সমাজকে আলোকিত করেছেন তাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। স্মারকে বিজ্ঞাপন প্রদান করে এবং সৃজনশীল একটি প্রকাশনা তৈরীতে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মর্যাদা মহান আল্লাহ বৃদ্ধি করে দিন। সমস্যাবৃত্ত সমাজে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক কল্যাণমূখী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা একক কোন সংগঠন কিংবা সম্প্রদায়ের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা বিশ্বাস করি ঐশি জ্ঞানের আলোকে শতাব্দী পর শতাব্দী যারা মহৎ কিছু করেছেন তারা সুচিন্তীত, জ্ঞানী এবং ত্যাগী ব্যক্তি। পেশাগত সংগ্রামে যারা নেতৃত্ব দিয়ে আইন ও অদালত, চিকিৎসা ও সেবা, উন্নয়ন ও উৎপাদন, অবকাঠামোগত নির্মাণ ও সঞ্চালন, শিক্ষা ও গবেষনায় কাজ করেন তারাই পেশাজীবি। প্রকৌশলীগণ জাতীর সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে সার্বক্ষনিক পেশাগত সেবা দিয়ে সচল রাখেন এবং দূযোর্গ ও বিপাকে নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করেন।
স্মারক, ওয়েবসাইট ও সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত সুপারিশ এবং দাবিসমূহ জাতীকে শক্তিশালী করবে এবং জাতীয় উন্নয়ন ও সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে, ইনশা আল্লাহ।
আমাদের লক্ষ্য অর্জনে আশাকরি সচেতন নাগরিকবৃন্দের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেশ ও জাতীর কল্যাণ বয়ে আনবে এই প্রত্যাশা করছি।
আল্লাহ আমাদের সকল তৎপড়তা কবুল করে নিন।
প্রকৌশলী আব্দুছ ছাত্তার শাহ,
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, এফডিইবি।
নতুন বিশ্বব্যবস্থা, শিল্পের চাহিদা, মানবসম্পদ উন্নয়নে শিক্ষা ও শিল্পখাতের যুগল ভূমিকা, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও করণীয়, পেশাগত কাঠামোর পরিবর্তিত রূপরেখা, সংকট ও সম্ভাবনার ক্রসরোডে অবস্থিত মাতৃভূমি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা এবং পেশাজীবি সংগঠন হিসেবে যথার্থ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয় নিঁখুতভাবে তুলে ধরা হবে। শ্রমবাজারের পেশাভিত্তিক চাহিদার সাথে সমন্বয় রেখে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন সময়ে কিছু সুপারিশ পেশ করা হয়েছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এফডিইবি আগামী দিনে উন্নয়নের রূপকল্প বাস্তবায়নে একটি কার্যকরি নির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হবে।আরেকটি বিষয় হচ্ছে-প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এফডিইবি) প্রকৌশল সেক্টরে নৈতিকতা সম্প্রসারণ ও দক্ষ প্রকৌশলী সৃষ্টিতে যে সকল কর্মসূচী পালন করছে; আমাদের প্রতিটি কার্যক্রমে তার প্রতিচিত্র উপস্থাপনের মাধ্যমে আগামীর সম্ভাবনার বাংলাদেশ বিনির্মানের প্রতিনিধিত্ব করবে ইনশাআল্লাহ।
আমরা মনে করি, একটি দেশের টেকসই উন্নয়নে দক্ষ কর্মীবাহিনী, সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ যেমন প্রয়োজন- নৈতিক উন্নয়নকে সর্বাধিক প্রাধান্য দেয়াও তেমনিভাবে আবশ্যক। এফডিইবি তার প্রকাশিত সকল স্মারক ও সকল কর্মকান্ডে এই নৈতিকতাকেই প্রধান উপজিব্য হিসেবে গ্রহণ করেছে। আলহামদুলিল্লাহ দেশের হাজার হাজার প্রকৌশলী আমাদের সকল কর্মসূচীকে স্বাগত জানিয়েছে এবং স্বতঃষ্ফূর্ত অংশগ্রহণ করছেন।
পরিশেষে যাদের সুচিন্তিত পরামর্শ, অনুপ্রেরণা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে স্মারক, ওয়েবসাইট, সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্রকাশনা প্রকাশ করা সম্ভব হলো তাদের প্রতি থাকলো অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং রবের কাছে উত্তম প্রতিদানের প্রত্যাশা। পাঠকদের প্রতি থাকলো হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও অনিচ্ছাকৃত ভূল-ত্রুটিগুলোকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
প্রকৌশলী জয়নুল আবেদীন,
সাধরণ সম্পাদক, এফডিইবি।